০৪:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাওরাঞ্চলে শাক সবজি উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যাপ্ত, তবুও কমছেনা দাম।

আলমগীর হোসেন নিকলী কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৮:২৮:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
  • / ২৩ Time View

 

আলমগীর হোসেন, নিকলী, কিশোরগঞ্জ।

হাওরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার নিকলী-বাজিতপুরসহ আশেপাশের সকল হাওরের উপজেলাতেই মৌসুমী আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ধরণের ফসলের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলনে চাষিরা তুলনামূলক লাভবান । বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসবজির সরবরাহ ও উৎপাদন দেখে দামের ক্ষেত্রে অসন্তোষ প্রকাশ করে চলেছেন নিন্ম আয়ের হাওরঅঞ্চলের লোকেরা।

নিকলী উপজেলার ষাইটধার গ্রামের অটোরিকশা চালক জয়নাল সবজি বাজারে গিয়ে বলতে শোনা গেছে বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে সবজি রয়েছে তারপরও সবজির দাম তুলনামূলক অনেক বেশি। তিনি আরও বলেন গোল আলু ছাড়া প্রায় সকল ধরণের সবজির দাম বেশি বলেও তিনি উল্লেখ করেন। একই এলাকার কৃষির সাথে জড়িত নিন্ম আয়ের মনিন্দ্র হাট থেকে আসার সময়ে বলতে শোনা যাচ্ছে শাকসবজি বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসবজি থাকলেও কম দামে মিলেনি কোনো ধরণের সবজি। এছাড়াও জেলার সর্ববৃহৎ কাঁচামালের আড়ত পিরিজপুরে গিয়ে দেখা মিলে বিভিন্ন ধরণের পাইকারদের। সেখানে প্রচুর পরিমাণে কাঁচামাল রয়েছে। তবে দাম সেখানেও তুলনামূলক অনেক বেশি।

সেখানকার পাইকারদেরকে হতাশার সুরে বলতে শোনা গেছে, চড়া দামে কিনে নিয়ে স্থানীয় হাট বাজারে বিক্রি করতে গিয়ে তাদেরকে অনেক দরকষাকষি করতে হচ্ছে। সেখানকার পাইকারি বাজারে নিকলীর স্বাধীন নামের এক পাইকারকে শাকসবজির বিষয়ে জিজ্ঞেস করতেই বলতে লাগলেন, এই এলাকায় প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজির ফলন হয়েছে। বাজারেও রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। তবুও দাম বেশি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

নিকলী উপজেলার কারপাশা বাজারে শামসুদ্দিন নামের একজনকে খুচরা লাউ সবজি বিক্রি করতে দেখা গেছে খোলা জায়গায় বসে। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় এই বছর সবজি আবাদে কি অবস্থা? জবাবে তিনি এই বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন পেয়েছেন বলে জানান। তবে সার, কীটনাশক,ও শ্রমিকের খরচসহ সকল আনুসাঙ্গিক দিক বিবেচনায় তুলনামূলক খরচও অতিরিক্ত বলে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি তিনি সবজি বিক্রি করে অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি লাভবান হয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন।

সরেজমিনে বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা গেছে নিন্ম আয়ের লোকেরা হিমসিম খাচ্ছে শাক সবজির দাম নিয়ে। শীতকালীন সবজির মধ্যে দেখা গেছে বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি, কাচা মরিচ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি, টমেটো ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি, শিম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি, কড়লা ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। ফুল কপি ৮০ থেকে ১২০ টাকা, ছোট সাইজের অংককুমড়াও লাউয়ের দাম সর্বনিম্ন ৫০ টাকা আর বড় সাইজের ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত।

তবে স্বস্তি শুধু গোল আলুর বেলায়। গোল আলু প্রতি কেজি ২০ থেকে ৩৫ টাকায়। শুধু শাকসবজির দামের ক্ষেত্রে নয় অনেককেই বলতে শোনা যাচ্ছে মাছের দেশেই মাছের দাম তুলনামূলক অনেক বেশি। সেখানকার হাট-বাজারে মাছের দামও সবজির ন্যায় অনেকখানি বেশি। সচেতন মহলের অনেকেই ধারণা করে চলেছেন বাজারে তদারকির পরিমাণটা তুলনামূলক কমে গেছে। এই কারণেই হয়তো অনেকখানি এমন তারতম্য হয়ে থাকতে পারে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

হাওরাঞ্চলে শাক সবজি উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যাপ্ত, তবুও কমছেনা দাম।

Update Time : ০৮:২৮:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

 

আলমগীর হোসেন, নিকলী, কিশোরগঞ্জ।

হাওরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার নিকলী-বাজিতপুরসহ আশেপাশের সকল হাওরের উপজেলাতেই মৌসুমী আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ধরণের ফসলের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলনে চাষিরা তুলনামূলক লাভবান । বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসবজির সরবরাহ ও উৎপাদন দেখে দামের ক্ষেত্রে অসন্তোষ প্রকাশ করে চলেছেন নিন্ম আয়ের হাওরঅঞ্চলের লোকেরা।

নিকলী উপজেলার ষাইটধার গ্রামের অটোরিকশা চালক জয়নাল সবজি বাজারে গিয়ে বলতে শোনা গেছে বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে সবজি রয়েছে তারপরও সবজির দাম তুলনামূলক অনেক বেশি। তিনি আরও বলেন গোল আলু ছাড়া প্রায় সকল ধরণের সবজির দাম বেশি বলেও তিনি উল্লেখ করেন। একই এলাকার কৃষির সাথে জড়িত নিন্ম আয়ের মনিন্দ্র হাট থেকে আসার সময়ে বলতে শোনা যাচ্ছে শাকসবজি বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসবজি থাকলেও কম দামে মিলেনি কোনো ধরণের সবজি। এছাড়াও জেলার সর্ববৃহৎ কাঁচামালের আড়ত পিরিজপুরে গিয়ে দেখা মিলে বিভিন্ন ধরণের পাইকারদের। সেখানে প্রচুর পরিমাণে কাঁচামাল রয়েছে। তবে দাম সেখানেও তুলনামূলক অনেক বেশি।

সেখানকার পাইকারদেরকে হতাশার সুরে বলতে শোনা গেছে, চড়া দামে কিনে নিয়ে স্থানীয় হাট বাজারে বিক্রি করতে গিয়ে তাদেরকে অনেক দরকষাকষি করতে হচ্ছে। সেখানকার পাইকারি বাজারে নিকলীর স্বাধীন নামের এক পাইকারকে শাকসবজির বিষয়ে জিজ্ঞেস করতেই বলতে লাগলেন, এই এলাকায় প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজির ফলন হয়েছে। বাজারেও রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। তবুও দাম বেশি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

নিকলী উপজেলার কারপাশা বাজারে শামসুদ্দিন নামের একজনকে খুচরা লাউ সবজি বিক্রি করতে দেখা গেছে খোলা জায়গায় বসে। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় এই বছর সবজি আবাদে কি অবস্থা? জবাবে তিনি এই বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন পেয়েছেন বলে জানান। তবে সার, কীটনাশক,ও শ্রমিকের খরচসহ সকল আনুসাঙ্গিক দিক বিবেচনায় তুলনামূলক খরচও অতিরিক্ত বলে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি তিনি সবজি বিক্রি করে অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি লাভবান হয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন।

সরেজমিনে বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা গেছে নিন্ম আয়ের লোকেরা হিমসিম খাচ্ছে শাক সবজির দাম নিয়ে। শীতকালীন সবজির মধ্যে দেখা গেছে বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি, কাচা মরিচ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি, টমেটো ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি, শিম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি, কড়লা ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। ফুল কপি ৮০ থেকে ১২০ টাকা, ছোট সাইজের অংককুমড়াও লাউয়ের দাম সর্বনিম্ন ৫০ টাকা আর বড় সাইজের ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত।

তবে স্বস্তি শুধু গোল আলুর বেলায়। গোল আলু প্রতি কেজি ২০ থেকে ৩৫ টাকায়। শুধু শাকসবজির দামের ক্ষেত্রে নয় অনেককেই বলতে শোনা যাচ্ছে মাছের দেশেই মাছের দাম তুলনামূলক অনেক বেশি। সেখানকার হাট-বাজারে মাছের দামও সবজির ন্যায় অনেকখানি বেশি। সচেতন মহলের অনেকেই ধারণা করে চলেছেন বাজারে তদারকির পরিমাণটা তুলনামূলক কমে গেছে। এই কারণেই হয়তো অনেকখানি এমন তারতম্য হয়ে থাকতে পারে।