০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আশুগঞ্জে অবৈধ বালি উত্তোলন: বিদ্যুৎকেন্দ্র ও জাতীয় গ্রিড লাইনের অস্তিত্ব বিপন্ন

জহির শাহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
  • Update Time : ১২:০৭:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১৭ Time View

 

২৪ নভেম্বর ২০২৫ | জহির শাহ্ | ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

মেঘনা নদীর আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র সংলগ্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করছে। প্রতিদিন ১০–১২টি লোড ড্রেজারের মাধ্যমে কয়েক লাখ ঘনফুট বালি তোলা হচ্ছে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তারা।

এই অবৈধ কার্যক্রমের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ভৈরব–আশুগঞ্জ জাতীয় গ্রিড লাইনের বৈদ্যুতিক টাওয়ার। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে যে কোনো সময় বিদ্যুৎকেন্দ্র ও জাতীয় গ্রিড লাইনের দুটি টাওয়ার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এতে উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি শিল্প-কারখানার উৎপাদনও স্থবির হয়ে পড়বে।

অবৈধ বালি উত্তোলনের প্রভাব পড়ছে নদীর ওপর নির্মিত তিনটি সড়ক ও রেলসেতু এবং চর সোনারামপুর গ্রামের শত শত পরিবারের ওপর। গ্রামবাসীরা জানান, “আমাদের ঘরের কাছ থেকে প্রতিদিন বালি তোলা হচ্ছে। আমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। দ্রুত বালি উত্তোলন বন্ধ করা হোক।”

আশুগঞ্জ উপজেলা বিদ্যুৎ উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী আবু জাফর বলেন, “জাতীয় গ্রিড লাইনের এবং তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছাকাছি নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। নদী ভাঙলে টাওয়ার ও কেন্দ্র নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”

ভৈরব বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্রের প্রকৌশলী মো. ইকবাল হোসেন জানান, কেন্দ্রটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হবে।

আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফে মোহাম্মদ ছড়া জানিয়েছেন, নদীতে জাতীয় গ্রিড লাইনের কাছ থেকে বালি উত্তোলনের বিষয়ে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করেনি; অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

আশুগঞ্জে অবৈধ বালি উত্তোলন: বিদ্যুৎকেন্দ্র ও জাতীয় গ্রিড লাইনের অস্তিত্ব বিপন্ন

Update Time : ১২:০৭:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫

 

২৪ নভেম্বর ২০২৫ | জহির শাহ্ | ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

মেঘনা নদীর আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র সংলগ্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করছে। প্রতিদিন ১০–১২টি লোড ড্রেজারের মাধ্যমে কয়েক লাখ ঘনফুট বালি তোলা হচ্ছে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তারা।

এই অবৈধ কার্যক্রমের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ভৈরব–আশুগঞ্জ জাতীয় গ্রিড লাইনের বৈদ্যুতিক টাওয়ার। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে যে কোনো সময় বিদ্যুৎকেন্দ্র ও জাতীয় গ্রিড লাইনের দুটি টাওয়ার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এতে উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি শিল্প-কারখানার উৎপাদনও স্থবির হয়ে পড়বে।

অবৈধ বালি উত্তোলনের প্রভাব পড়ছে নদীর ওপর নির্মিত তিনটি সড়ক ও রেলসেতু এবং চর সোনারামপুর গ্রামের শত শত পরিবারের ওপর। গ্রামবাসীরা জানান, “আমাদের ঘরের কাছ থেকে প্রতিদিন বালি তোলা হচ্ছে। আমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। দ্রুত বালি উত্তোলন বন্ধ করা হোক।”

আশুগঞ্জ উপজেলা বিদ্যুৎ উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী আবু জাফর বলেন, “জাতীয় গ্রিড লাইনের এবং তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছাকাছি নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। নদী ভাঙলে টাওয়ার ও কেন্দ্র নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”

ভৈরব বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্রের প্রকৌশলী মো. ইকবাল হোসেন জানান, কেন্দ্রটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হবে।

আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফে মোহাম্মদ ছড়া জানিয়েছেন, নদীতে জাতীয় গ্রিড লাইনের কাছ থেকে বালি উত্তোলনের বিষয়ে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করেনি; অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।