০১:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এখনো সম্পন্ন হয়নি সিসমিক-ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর তালিকা

জহির শাহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৮:২১:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
  • / ২৫ Time View

 

জহির শাহ্, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ২৩ নভেম্বর ২০২৫

ভূকম্পবিদ্যার মানচিত্রে ব্রাহ্মণবাড়িয়া দীর্ঘদিন ধরেই উচ্চ-সিসমিক-ইনটেনসিটি জোন হিসেবে পরিচিত। কিন্তু বিস্ময়কর বাস্তবতা হলো—শহর ও জেলার কোথাও সিসমিক-ভালনারেবল কিংবা স্ট্রাকচারালি-ডিলাপিডেটেড ভবনের কোনো আনুষ্ঠানিক রিস্ক ইনভেন্টরি এখনো প্রস্তুত করা হয়নি। পৌরসভা, গণপূর্ত বিভাগ (PWD) এবং ফায়ার সার্ভিস—সব প্রতিষ্ঠানই নিশ্চিত করেছে যে, কোনো সমন্বিত ভবন-ঝুঁকি ম্যাপিং আজও হয়নি।

পানপট্টি এলাকার ব্যবসায়ী খোকন মিয়া বর্ণনা দেন, সাম্প্রতিক ভূমিকম্পটি ছিল “অস্বাভাবিক তীব্র”, ভবনের স্ট্রাকচারাল ফ্রেম প্রায় ৪–৫ সেকেন্ড ধরে স্পষ্টভাবে অসিলেশন করেছিল। লোকজন আতঙ্কিত হয়ে ভবন থেকে বেরিয়ে আসে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক নিউটন দাস জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের স্ট্রাকচারাল অ্যাসেসমেন্ট বা তালিকা তৈরি করা তাদের নয়—এটি প্রশাসনিক ও ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তরের কাজ। তবে জরুরি সাড়া (Emergency Response) দিতে তারা সবসময় প্রস্তুত আছে। প্রতিটি উপজেলায় একটি করে ফায়ার স্টেশন বর্তমানে সক্রিয়।

পরিকল্পনাবিদ জান্নাতুল ফেরদৌস আরা বলেন, তিনি ২০২২ সালে যোগদানের পরও কোনো সিসমিক-ভালনারেবিলিটি সার্ভে বা র‌্যাপিড ভিজ্যুয়াল স্ক্রিনিং (RVS) পরিচালিত হতে দেখেননি।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সাদ মোহাম্মদ আন্দালিব জানান, তাদের দপ্তর কেবল সরকারি ভবনের সিসমিক-রিস্ক ইভ্যালুয়েশন পরিচালনা করে। নবীনগরের পুরনো আদালত ভবনসহ দুই–তিনটি ভবনকে ইতোমধ্যে হাই-রিস্ক স্ট্রাকচার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং সেগুলো অপসারণ করে নতুন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। অন্যান্য ভবনের স্ট্রাকচারাল সেফটি অ্যানালাইসিস চলমান।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম বলেন, সারা দেশের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেও ভূকম্প অনুভূত হয়েছে, তবে ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তিনি স্বীকার করেন—দেশে রিয়েল-টাইম আরলি-ওয়ার্নিং সিস্টেম নেই, তাই ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সচেতনতা অপরিহার্য। মন্ত্রণালয় বছরে দুবার ডিজাস্টার রেসপন্স ড্রিল পরিচালনা করে থাকে। বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে দ্রুত উদ্ধার, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য জেলা প্রশাসনের একটি ইন্টিগ্রেটেড কন্টিনজেন্সি অপারেশন প্ল্যান প্রস্তুত রয়েছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এখনো সম্পন্ন হয়নি সিসমিক-ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর তালিকা

Update Time : ০৮:২১:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫

 

জহির শাহ্, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ২৩ নভেম্বর ২০২৫

ভূকম্পবিদ্যার মানচিত্রে ব্রাহ্মণবাড়িয়া দীর্ঘদিন ধরেই উচ্চ-সিসমিক-ইনটেনসিটি জোন হিসেবে পরিচিত। কিন্তু বিস্ময়কর বাস্তবতা হলো—শহর ও জেলার কোথাও সিসমিক-ভালনারেবল কিংবা স্ট্রাকচারালি-ডিলাপিডেটেড ভবনের কোনো আনুষ্ঠানিক রিস্ক ইনভেন্টরি এখনো প্রস্তুত করা হয়নি। পৌরসভা, গণপূর্ত বিভাগ (PWD) এবং ফায়ার সার্ভিস—সব প্রতিষ্ঠানই নিশ্চিত করেছে যে, কোনো সমন্বিত ভবন-ঝুঁকি ম্যাপিং আজও হয়নি।

পানপট্টি এলাকার ব্যবসায়ী খোকন মিয়া বর্ণনা দেন, সাম্প্রতিক ভূমিকম্পটি ছিল “অস্বাভাবিক তীব্র”, ভবনের স্ট্রাকচারাল ফ্রেম প্রায় ৪–৫ সেকেন্ড ধরে স্পষ্টভাবে অসিলেশন করেছিল। লোকজন আতঙ্কিত হয়ে ভবন থেকে বেরিয়ে আসে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক নিউটন দাস জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের স্ট্রাকচারাল অ্যাসেসমেন্ট বা তালিকা তৈরি করা তাদের নয়—এটি প্রশাসনিক ও ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তরের কাজ। তবে জরুরি সাড়া (Emergency Response) দিতে তারা সবসময় প্রস্তুত আছে। প্রতিটি উপজেলায় একটি করে ফায়ার স্টেশন বর্তমানে সক্রিয়।

পরিকল্পনাবিদ জান্নাতুল ফেরদৌস আরা বলেন, তিনি ২০২২ সালে যোগদানের পরও কোনো সিসমিক-ভালনারেবিলিটি সার্ভে বা র‌্যাপিড ভিজ্যুয়াল স্ক্রিনিং (RVS) পরিচালিত হতে দেখেননি।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সাদ মোহাম্মদ আন্দালিব জানান, তাদের দপ্তর কেবল সরকারি ভবনের সিসমিক-রিস্ক ইভ্যালুয়েশন পরিচালনা করে। নবীনগরের পুরনো আদালত ভবনসহ দুই–তিনটি ভবনকে ইতোমধ্যে হাই-রিস্ক স্ট্রাকচার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং সেগুলো অপসারণ করে নতুন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। অন্যান্য ভবনের স্ট্রাকচারাল সেফটি অ্যানালাইসিস চলমান।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম বলেন, সারা দেশের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেও ভূকম্প অনুভূত হয়েছে, তবে ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তিনি স্বীকার করেন—দেশে রিয়েল-টাইম আরলি-ওয়ার্নিং সিস্টেম নেই, তাই ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সচেতনতা অপরিহার্য। মন্ত্রণালয় বছরে দুবার ডিজাস্টার রেসপন্স ড্রিল পরিচালনা করে থাকে। বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে দ্রুত উদ্ধার, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য জেলা প্রশাসনের একটি ইন্টিগ্রেটেড কন্টিনজেন্সি অপারেশন প্ল্যান প্রস্তুত রয়েছে।