০১:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি মহিলা কলেজ মার্কেটের বিতর্কে শহরের সব ফার্মেসি বন্ধ, রোগীদের দুর্ভোগ বৃদ্ধি।

জহির শাহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
  • Update Time : ০১:১৭:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১০ Time View

 

জহির শাহ্, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ২৭ অক্টোবর ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে সরকারি মহিলা কলেজ মার্কেটকে কেন্দ্র করে চলমান বিতর্কে জেলা কেমিস্ট ও ড্রাগিস্ট সমিতি সোমবার থেকে শহরের সমস্ত ফার্মেসি বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। ১৯৮৩ সাল থেকে কলেজ মার্কেটে বৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসা ফার্মেসি মালিকরা বরাদ্দকৃত দোকানগুলোকে “অবৈধ” আখ্যা দিয়ে উচ্ছেদ করার কলেজ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছেন।

সোমবার সকাল ৬টা থেকে কার্যকর হওয়া এই কর্মসূচিতে শহরের সহস্রাধিক ওষুধের দোকান বন্ধ রয়েছে। এতে শহরের সাধারণ মানুষ ও রোগীরা সরাসরি দুর্ভোগে পড়েছেন। জেলার সদর হাসপাতালসহ শতাধিক বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার রোগী ওষুধ সংগ্রহের জন্য ফার্মেসির উপর নির্ভরশীল। কিন্তু সকল ফার্মেসি বন্ধ থাকায় তারা প্রাথমিক চিকিৎসার পরও প্রয়োজনীয় ওষুধ নিতে পারছেন না, ফলে অনেকে শহরের বাইরে গিয়ে ওষুধ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

ধর্মঘটের সময় ব্যবসায়ীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন এবং শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কলেজ মার্কেটের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এতে বক্তব্য রাখেন জেলা কেমিস্ট ও ড্রাগিস্ট সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ছানাউল হক ভূইয়া, পৌর শাখার সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জিয়াউল হক, খোকন খান প্রমুখ। তারা জানান, কলেজ কর্তৃপক্ষ পূর্বে দোকান স্থানান্তরের জন্য ছয় মাস সময়ের দাবি অগ্রাহ্য করে জোরপূর্বক উচ্ছেদের চেষ্টা করছে, যা অমানবিক ও বৈধতার পরিপন্থী। ব্যবসায়ীরা অবিলম্বে উচ্ছেদ বন্ধ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়সঙ্গত সমাধান চেয়েছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় রোগী ও স্বজনরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, “ডাক্তার দেখানোর পর চিকিৎসা সম্পন্ন হলেও ফার্মেসি বন্ধ থাকার কারণে ওষুধ কিনতে পারছি না। এতে আমাদের সেবা ব্যাহত হচ্ছে এবং প্রচুর ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে।

উল্লেখ্য, কলেজ মার্কেটের সামনে কিছু শিক্ষার্থীও অবৈধ দোকান উচ্ছেদ ও নতুন গেইট নির্মাণের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন। এই পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তেজনা তৈরি করেছে শহরের ব্যবসায়িক এবং চিকিৎসা পরিবেশে।

জেলা কেমিস্ট ও ড্রাগিস্ট সমিতির নেতারা জানিয়েছেন, সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সকল ফার্মেসি বন্ধ রাখার কর্মসূচি চলতে থাকবে এবং তারা সরকারী ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার ন্যায়সঙ্গত সমাধান চান।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি মহিলা কলেজ মার্কেটের বিতর্কে শহরের সব ফার্মেসি বন্ধ, রোগীদের দুর্ভোগ বৃদ্ধি।

Update Time : ০১:১৭:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

 

জহির শাহ্, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ২৭ অক্টোবর ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে সরকারি মহিলা কলেজ মার্কেটকে কেন্দ্র করে চলমান বিতর্কে জেলা কেমিস্ট ও ড্রাগিস্ট সমিতি সোমবার থেকে শহরের সমস্ত ফার্মেসি বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। ১৯৮৩ সাল থেকে কলেজ মার্কেটে বৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসা ফার্মেসি মালিকরা বরাদ্দকৃত দোকানগুলোকে “অবৈধ” আখ্যা দিয়ে উচ্ছেদ করার কলেজ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছেন।

সোমবার সকাল ৬টা থেকে কার্যকর হওয়া এই কর্মসূচিতে শহরের সহস্রাধিক ওষুধের দোকান বন্ধ রয়েছে। এতে শহরের সাধারণ মানুষ ও রোগীরা সরাসরি দুর্ভোগে পড়েছেন। জেলার সদর হাসপাতালসহ শতাধিক বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার রোগী ওষুধ সংগ্রহের জন্য ফার্মেসির উপর নির্ভরশীল। কিন্তু সকল ফার্মেসি বন্ধ থাকায় তারা প্রাথমিক চিকিৎসার পরও প্রয়োজনীয় ওষুধ নিতে পারছেন না, ফলে অনেকে শহরের বাইরে গিয়ে ওষুধ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

ধর্মঘটের সময় ব্যবসায়ীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন এবং শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কলেজ মার্কেটের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এতে বক্তব্য রাখেন জেলা কেমিস্ট ও ড্রাগিস্ট সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ছানাউল হক ভূইয়া, পৌর শাখার সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জিয়াউল হক, খোকন খান প্রমুখ। তারা জানান, কলেজ কর্তৃপক্ষ পূর্বে দোকান স্থানান্তরের জন্য ছয় মাস সময়ের দাবি অগ্রাহ্য করে জোরপূর্বক উচ্ছেদের চেষ্টা করছে, যা অমানবিক ও বৈধতার পরিপন্থী। ব্যবসায়ীরা অবিলম্বে উচ্ছেদ বন্ধ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়সঙ্গত সমাধান চেয়েছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় রোগী ও স্বজনরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, “ডাক্তার দেখানোর পর চিকিৎসা সম্পন্ন হলেও ফার্মেসি বন্ধ থাকার কারণে ওষুধ কিনতে পারছি না। এতে আমাদের সেবা ব্যাহত হচ্ছে এবং প্রচুর ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে।

উল্লেখ্য, কলেজ মার্কেটের সামনে কিছু শিক্ষার্থীও অবৈধ দোকান উচ্ছেদ ও নতুন গেইট নির্মাণের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন। এই পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তেজনা তৈরি করেছে শহরের ব্যবসায়িক এবং চিকিৎসা পরিবেশে।

জেলা কেমিস্ট ও ড্রাগিস্ট সমিতির নেতারা জানিয়েছেন, সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সকল ফার্মেসি বন্ধ রাখার কর্মসূচি চলতে থাকবে এবং তারা সরকারী ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার ন্যায়সঙ্গত সমাধান চান।