০৯:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মায়ের লাশ দেখাকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহত ১

জহির শাহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৫:৩৪:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১৪ Time View

 

জহির শাহ্ | ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি | ২৬ অক্টোবর ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার বিরামপুর গ্রামে মায়ের মরদেহ দেখাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নাসির উদ্দিন (৬৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকালে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩০ জন।

নিহত নাসির উদ্দিন ওই গ্রামের মৃত মইজ উদ্দিনের ছেলে ও স্থানীয় ইকবাল হোসেন গোষ্ঠীর অনুসারী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার ৯৫ বছর বয়সী মোসাম্মৎ বেগম মারা যান। তাঁর ছয় সন্তানের মধ্যে চারজন—নোয়াব মিয়া, আবদুল হক, ফজল হক ও শহীদুল হক—দীর্ঘদিন ধরে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের অনুসারী। অন্যদিকে, বাড়িতে থাকা দুই ভাই—জহিরুল হক ও নুরুল হক—প্রতিপক্ষ গোষ্ঠীর হওয়ায় তারা চার ভাইকে মায়ের মরদেহ দেখার সুযোগ না দিয়েই দাফন সম্পন্ন করেন।

এ ঘটনায় গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার সকালে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা, টেঁটা, বল্লম, এমনকি হেলমেট ও ক্রিকেট প্যাড পরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

সংঘর্ষ চলাকালে ককটেল বিস্ফোরণ, দোকান ও ঘরবাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। গুরুতর আহত নাসির উদ্দিনকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সকাল ১১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, “পারিবারিক দ্বন্দ্ব, আধিপত্য বিস্তার ও মায়ের লাশ দেখাকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে। বর্তমানে এলাকা শান্ত রয়েছে, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”

নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মায়ের লাশ দেখাকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহত ১

Update Time : ০৫:৩৪:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

 

জহির শাহ্ | ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি | ২৬ অক্টোবর ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার বিরামপুর গ্রামে মায়ের মরদেহ দেখাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নাসির উদ্দিন (৬৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকালে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩০ জন।

নিহত নাসির উদ্দিন ওই গ্রামের মৃত মইজ উদ্দিনের ছেলে ও স্থানীয় ইকবাল হোসেন গোষ্ঠীর অনুসারী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার ৯৫ বছর বয়সী মোসাম্মৎ বেগম মারা যান। তাঁর ছয় সন্তানের মধ্যে চারজন—নোয়াব মিয়া, আবদুল হক, ফজল হক ও শহীদুল হক—দীর্ঘদিন ধরে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের অনুসারী। অন্যদিকে, বাড়িতে থাকা দুই ভাই—জহিরুল হক ও নুরুল হক—প্রতিপক্ষ গোষ্ঠীর হওয়ায় তারা চার ভাইকে মায়ের মরদেহ দেখার সুযোগ না দিয়েই দাফন সম্পন্ন করেন।

এ ঘটনায় গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার সকালে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা, টেঁটা, বল্লম, এমনকি হেলমেট ও ক্রিকেট প্যাড পরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

সংঘর্ষ চলাকালে ককটেল বিস্ফোরণ, দোকান ও ঘরবাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। গুরুতর আহত নাসির উদ্দিনকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সকাল ১১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, “পারিবারিক দ্বন্দ্ব, আধিপত্য বিস্তার ও মায়ের লাশ দেখাকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে। বর্তমানে এলাকা শান্ত রয়েছে, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”

নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।